হু মুভড মাউ চিজ
পৃ্ষ্ঠা ১ থেকে ১০
পৃষ্ঠা:০১
‘হু মুভড মাউ চিজ?’ – গল্পটি হল:স্নিফ ও স্কারি প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে জেগে উঠে নির্দিষ্ট রুটিন অনুসরণ করে নিয়মিত মেইজের উদ্দেশে ছুটে যায়। যখন তারা মেইজে পৌঁছে, ইঁদুর দুটি তাদের দৌড়ানোর জুতা খোলে ফেলে। জুতা জোড়া একসাথে বেঁধে ফেলে তারা তাদের গলায় ঝুলিয়ে রাখে যাতে দরকারের সময় তা খুঁজে পায়। তারপর তারা মনের আনন্দে চিজ উপভোগ করে। মজার মজার খাবার উপভোগ করার জন্য হেম ও হিউ তেমনি প্রতিদিন সকালে চিজ স্টেশন সি-এর দিকে ছুটে যায়। অবশ্য কিছুক্ষণ পর তারা ভিন্ন এক রুটিন অনুসরণ করে থাকে। মাঝে মাঝে হেম ও হিউ তাদের বন্ধুদের ডেকে চিজ স্টেশন সি এর স্তূপীকৃত চিজ দেখায়। তারা গর্ব ভরে সে দিকে তাকিয়ে বন্ধুদের বলে, দেখ কি সুন্দর চিজ, মাঝে মাঝে বন্ধুদের সাথে চিজ শেয়ার করলেও বেশীর ভাগ সময়ে তা করে না। ‘এই চিজ আমাদের’, হেম বলে উঠলো, এই চিজ পেতে আমাদের প্রচুর পরিশ্রম হয়েছে, বলে সে একটি সুন্দর চিজ তুলে মুখে দিল। কিছুক্ষণ পরে হেম বরাবরের মত ঘুমিয়ে পড়ত। চিজ দিয়ে উদর পূর্তি করে প্রতি রাতে তারা হেলে দুলে বাড়ি ফিরত এবং প্রতিদিন ভোরে তারা আরও চিজের জন্য নিশ্চিতভাবে ঐ দিকেই ছুটত। এভাবে কিছু দিন কাটল। কিছুদিন পরে হেম ও হিউ এর আস্থাও সফলতা গর্বের রূপ নিল। তারা এতই আরামদায়ক জীবনযাপন করতে লাগল যে কি ঘটছে সেদিকে আর
পৃষ্ঠা:০২
তাদের খেয়ালই থাকল না। এদিকে স্লিফ ও স্কারি দিন দিন তাদের রুটিন ফলো করতে থাকল। তারা প্রতিদিন ভোরে পৌঁছে, নাক দিয়ে গন্ধ শুকে আচড় কাটে, চিজ স্টেশন সি এর চারদিকে দৌড়ায়। তারা তদন্ত করে দেখে গতকাল থেকে আজ কোন পরিবর্তন হয়েছে কিনা। তারপর তারা বসে চিজের উপর আস্তে আস্তে ঠোকরাতে থাকে। একদিন ভোরে তারা চিজ স্টেশন সি-তে পৌঁছে দেখে সেখানে কোন চিজ নেই তারা বিস্মিত হলো না। কারণ তারা আগেই টের পেয়েছিল যে প্রতিদিনই চিজ কমে যাচ্ছে, তারা যা ঘটবেই তার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল এবং সহজাত প্রকৃতি দিয়ে বুঝে নিল কি করতে হবে। তারা একে অপরের দিকে তাকাল গলায় ঝোলানো জুতা জোড়া নামাল, পায়ে জুতা দিয়ে ফিতা শক্ত করে বেঁধে নিল। তারা বিষয়টাকে বিশ্লেষণ করতে ভুল করল না, ইঁদুরের সমস্যা ও তার সমাধান উভয়ই খুব সহজ ও সরল। চিজ স্টেশন সি এর অবস্থার পরিবর্তন ঘটে গেছে। তাই স্নিখ ও স্কারি তাদের নিজেদের রুটিন পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিল। তারা উভয়েই মেইজের দিকে তাকাল স্নিখ তার নাক উপরে তুলল, চারদিকের ঘ্রাণ নিল এবং স্কারির দিকে মাথা নাড়াল, যে এরই মধ্যে মেইজের দিকে দৌড়ানো শুরু করে দিয়েছে। স্নিফ তাকে যত তাড়াতাড়ি পারে অনুসরণ করতে থাকল। তারা নতুন চিজের দিকে দৌড়াতে থাকল। এদিকে একই দিনে হেম ও হিউ চিজ স্টেশন সি তে পৌঁছল, তারা প্রতিদিন যে চিজ স্টেশনের পরিবর্তন হচ্ছিল তা মোটেই খেয়াল করেনি। তাই তারা ধরে নিয়েছিল যে তাদের চিজ সেখানে থাকবেই। তারা যা ঘটল তা দেখে রীতিমত অপ্রস্তুত হয়ে উঠলো।
পৃষ্ঠা:০৩
নেই, চিজ নেই হেম চেঁচাতে লাগল-চিজ নেই চিজ নেই। মনে হলো জোরে চিৎকার দিতে পারলে কেউ না কেউ চিজটা ফেরত দিয়ে যাবে। কে আমার চিজ সরিয়েছে, সে চিৎকার দিয়ে উঠলো। সবশেষে সে নিজের মাথায় হাত দিল, তার মুখটা লাল হয়ে উঠলো এবং সে তার গলার স্বর সপ্তমিতে চড়িয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো, এটা ঠিক হলো না। হাউ অবিশ্বাসের ভঙ্গিতে মাথা নাড়ল। সেও চিজ স্টেশন এর চিজের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। সে অনেকক্ষণ এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকল, দুঃখে হিমশীতল হয়ে উঠলো। সে এরকম অবস্থার জন্য প্রস্তুত ছিল না।হেম চেঁচিয়ে কিছু বলছিল কিন্তু হিউ তা শুনতে চাচ্ছিল না। যা ঘটেছে তা মোকাবেলা করতে সে প্রস্তুত ছিল না। তাই সে সব চিন্তা মাথা থেকে বের করে দিল। ছোট মানুষগুলোর এধরনের আচরণ খুব আকর্ষণীয় বা প্রোডাকটিভ না-হলেও তা বেশ বোধগম্য ছিল। চিজ খুঁজে বের করা খুব সহজ কাজ নয়। প্রতিদিনের আরামে চিজ উপভোগ করা থেকে এটা অনেক অনেক কঠিন।ছোট মানুষদের ক্ষেত্রে চিজ পাওয়া বলতে বুঝায় তাদের সুখি হওয়ার জন্য সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া অথবা ভালো থাকার একটা মানসিক ধারনা। হাউ চিজ বলতে বুঝত মায়া ভরা পরিবারে নিরাপদে থাকা এবং চেদ্দার লেনে নিজের একটা আরামদায়ক এক কটেজ।
পৃষ্ঠা:০৪
হেম অন্যদের তুলনায় বড়ো কিছু পাওয়াকে চিজ ভাবত। কে মেম্বার্ট হিলে বিরাট এক বাড়ির মালিক থাকাকেই তার চিজ মনে করত। যেহেতু চিজ পাওয়া কে তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পাওয়া মনে করত তাই তারা কি করবে তার সিদ্ধান্ত নিতে অনেকক্ষণ ধরে ভাবছিল। তারা চিজ বিহীন স্টেশন সি এর দিকে থাকিয়ে থাকতে লাগল। ভেবে পাচ্ছিল না-আসলেই চিজ চলে গেছে।স্নিখ ও স্কারি সেখানে দ্রুত চিজের জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দিল, হেম ও হাউ বরাবরের মত বোকা হয়ে বসে তাকল। তারা তাদের প্রতি অবিচারের জন্য চিৎকার দিয়ে নালিশ ও চেঁচামেচি করতে থাকল। হাউ হতাশ হতে থাকল। কাল্ও যদি চিজ না-পায় তাহলে কি হবে এই চিজ দিয়ে সে তার ভবিষ্যতের জন্য কত না স্বপ্ন বুনেছিল। ছোট মানুষ দুজন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিল না। এটা কেমন হলো? এটা যে ঘটতে পারে এ ব্যাপারে কেউ তাদের আগে সতর্ক করেনি, এটা ঠিক হলো না। কি ভেবেছিল আর কি হলো? হেম ও হাউ রাতে ক্ষুধা নিয়ে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরল। কিন্তু ফেরার আগে হাউ তার দেয়ালে লিখল-
পৃষ্ঠা:০৫
চিজ তোমার কাছে যত বেশি গুরুত্বপূর্ণ তত বেশি তুমি তা ধরে রাখতে চাইবে।
পৃষ্ঠা:০৬
পরের দিন হেম ও হাউ আবার বাড়ি থেকে বের হলো এবং চিজ স্টেশন সি তে আবার ফিরে গেল। সেখানে তারা যে কোন ভাবে চিজ ফিরে পাবার আশায় বসে থাকলো। পরিস্থিতির কোন উন্নতি হলো না। চিজ আর সেখানে ফিরে এল না। ছোট মানুষেরা কি করবে তা ভেবে পেলো না। তারা সেখানে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকল। হাউ যত জোরে পারে চোখ বন্ধ করে রাখল এবং দুই হাত কানের উপর ধরে রাখল। সে সব কিছুই মাথা থেকে বের করে দিল। সে আগে বুঝতে পারেনি যে চিজের সরবরাহ আস্তে আস্তে কমে আসছিল। এটা হঠাৎ করে চলে গেছে বলে সে বিশ্বাস করল। হেম বারবার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করল এবং পরিশেষে তার জটিল চিন্তা শক্তি ও বিশ্বাস নিয়ে শক্ত অবস্থানে পৌঁছল। তারা কেন আমার সাথে এমন করল? সে জানতে চাইল, এখানে আসলে কি ঘটেছে? অবশেষে হাউ চোখ খুললো, চারপাশে তাকালো এবং বলে ওঠল দেখতো, স্নিখ ও স্কারি গেল কোথায়? তারা কি এমন কিছু জানে যা আমরা জানিনা? হেম টিটকারি দিয়ে বললো তারা আবার কি জানে? হেম বলতে থাকল, তারা ইদুর মাত্র। তারা এতটুকুই জানে কি ঘটল আর কি করতে হবে। আমরা ছোট মানুষ। আমরা ইঁদুরের চেয়ে অনেক স্মার্ট। আমরা কি ঘটল, কেন ঘটল তা খুঁজে বের করতে পারব। আমি এটা জানি যে আমরা অনেক স্মার্ট। হাউ বললো কিন্তু এখন আমরা যা করছি তা স্মার্টদের মত না। আশেপাশের অনেক কিছুর চেঞ্জ হয়ে গেছে হেম, আমাদের চেঞ্জ হতে হবে এবং ভিন্নভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের কেন চেঞ্জ
পৃষ্ঠা:০৭
হতে হবে? হেম জানতে চাইল আমারা ছোট মানুষ। আমরা স্পেশাল। আমাদের সাথে এরকম ঘটতে পারে না। অথবা তাই যদি হয়ও আমাদের কিছু সুবিধা পাওয়া উচিত ছিল। কেন আমরা সুবিধা পাব? হাউ জানতে চাইল। কারণ এগুলো আমাদের ছিল-হেম দাবি করে বললো। কি ছিল আমাদের? হাউ আবার জানতে চাইল। চিজগুলো আমাদেরই ছিল কেন? হাউ জানতে চাইল। কারণ আমরা এই সমস্যা তৈরি করিনি, হেম বললো। কেউ না-কেউ এটা করেছে এবং আমাদের কিছু পাওয়ার ছিল। হাউ পরামর্শ দিয়ে বললো আমাদের এ নিয়ে বেশি বেশি চিন্তা করা বন্ধ করা উচিত এবং নতুন চিজের সন্ধানে বের হওয়া ঠিক না, হেম বললো। আমি এখানেই থাকব।যখন হেম ও হাউ কি করবে তা ভেবে পাচ্ছিল না, স্নিখ ও স্কারি বেশ ভালোই ছোটাছোটি করছিল। তারা মেইজ ধরে দৌড়াতে থাকল করিডোরের উপরে গেল, নিচে গেল, প্রত্যেকটি চিজ স্টেশনে চিজ খুঁজতে থাকল। তারা চিজ খোঁজা ছাড়া কিছুই ভাবছিল না। কিছুক্ষণ তারা কোন চিজই পেলো না। অবশেষে মেইজের এমন এক জায়গায় খুঁজতে গেল সেখানে এর আগে কখনো যায়নি-চিজ স্টেশন N। তারা আনন্দে চিৎকার দিয়ে উঠলো। যা খোঁজছিল তা তারা পেয়ে গেল, তাজা চিজের প্রচুর সাপ্লাই। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিল না, তাদের দেখা এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড়ো চিজের স্টক।এদিকে হেম ও হাউ প্রতিদিনই চিজ স্টেশন সি-তে গিয়ে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে থাকল। তারা এখন চিজ না-পাওয়ায়
পৃষ্ঠা:০৮
চরম ভোগান্তিতে পড়ল। তারা হতাশ ও রাগান্বিত হতে থাকল এবং একে অপরকে দোষারূপ করতে থাকল। হাউ প্রায়ই তাদের ইঁদুর বন্ধু স্নিফ ও স্কারির কথা ভাবতে থাকল, তারা কি নতুন কোন চিজ পেয়েছে? তার মনে হলো যে তারাও কঠিন সময় পার করেছে, অনিশ্চয়তা নিয়ে মেইজের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেরুচ্ছে। সে জানতো এই ছোটাছোটি বেশিক্ষণ চলবে না। মাঝে মাঝে হাউ কল্পনা করত যে স্নিফ স্কারি নতুন চিজ পেয়েছে এবং মজা করে খাচ্ছে। সে ভাবত সে নিজেও যদি মেইজে একটা নতুন চিজ খোঁজার জন্য বের হয় তবে তা কি তার জন্য ভালো হবে? সে মনে মনে নতুন চিজের স্বাদ গ্রহণ করতে থাকল। যত বেশি সে চিজ খোঁজার ও তা ভোগ করার কল্পনা করতে থাকল তত বেশি সে নিজেকে চিজ স্টেশন সি থেকে দূরে দেখতে পেলো। বের হওয়া যাক। সে হঠাৎ চিৎকার দিয়ে উঠলো। না হেম সাথে সাথে বললো আমি এটাই পছন্দ করি। এটাই আরামদায়ক। আমি এটাকেই চিনি। তাছাড়া বাইরের জগতটা বিপদজনক। না তা নয় হাউ যুক্তি দিয়ে বললো, আমি আগে এই মেইজের বিভিন্ন অঞ্চলে ছুটে বেড়িয়েছি, আবার আমরা তা করতে পারি। আমার বয়স হয়েছে এখন আর আমি এ কাজের উপযুক্ত নই, হেম বললো। আমার ভয় হয় এই ভেবে যে আমি আর হারতে এবং নিজেকে বোকা বানাতে পারব না। তুমি কি পারবে? এ কথা শুনে হাউয়ের পরাজিত হওয়ার ভয় আবার ফিরে এলো। তাই প্রতিদিনই ছোট মানুষ দুটি একই কাজ করতে থাকল। তারা প্রতিদিনই চিজ স্টেশন সি-তে যায় কোন চিজ পায় না এবং উৎকণ্ঠা ও হতাশা নিয়ে ফিরে আসে। কি ঘটেছে তারা তা ভুলে
পৃষ্ঠা:০৯
যেতে চায়, কিন্তু সহজে ঘুম আসে না, দিন দিন দৈহিক শক্তি হ্রাস পেতে থাকে এবং তারা বদ মেজাজি হতে থাকে। বাড়িতে তারা অস্বস্তিতে থাকে। ছোট মানবদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে থাকে এবং চিজ না-পাওয়ার দুঃস্বপ্নে তাদের দিন কাটতে থাকে। তথাপি হেম ও হাউ প্রতিদিন চিজ স্টেশন সি তে গিয়ে চিজের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। হেম বললো, দেখ আমরা যদি পরিশ্রম করতে পারতাম তাহলে আমরা দেখতাম আসলে কোন পরিবর্তন আসেনি। কাছাকাছি কোথায়ও হয়ত আমাদের চিজ আছে। সম্ভবত তা দেয়ালের পিছনেই লুকানো আছে। পরের দিন তারা যন্ত্রপাতি নিয়েই ফিরল। হেম শাবল ধরে রাখল হাউ হাতুড়ি দিয়ে শাবলের মাথায় বাড়ি দিতে থাকল যতক্ষণ না-দেয়ালে ছিদ্র তৈরি হয়। ছিদ্র দিয়ে তারা ভিতরে ঢুকে দেখল সেখানেও কোন চিজ নেই। হতাশ হলেও তারা বিশ্বাস রাখল যে সমস্যাটা তারা সমাধান করতে পারবে। তারা খুব ভোর থেকে আবার কাজ শুরু করল, দীর্ঘক্ষণ ধরে কঠোর পরিশ্রম করতে থাকল। কিন্তু ফলাফল দেয়ালের একটা ছিদ্র ছাড়া আর কিছুই পেলো না, হাউ আস্তে আস্তে বুঝতে শুরু করল কাজও প্রডাকটিভিটির পার্থক্য রয়েছে। হতে পারে হেম বললো আমাদের এখানেই বসে থেকে দেখা উচিত কি ঘটছে। আগে হোক আর পরে হোক তাদেরকে চিজ ফিরিয়ে দিতেই হবে। হাউ ও তা বিশ্বাস করা শুরু করল। তাই প্রতিদিনই সে বিশ্রাম নিতে রাতে বাড়ি ফিরে কিন্তু ভোরে হেমের সাথে অনিচ্ছা সত্ত্বে চিজ স্টেশন সি-তে ফিরে আসে কিন্তু চিজ আর দেখা যায় না। ক্ষুধা ও মানসিক চাপে থাকতে থাকতে ছোট মানবরা এভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। হাউ অবস্থার উন্নতি হবে
পৃষ্ঠা:১০
এই আশায় থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে পড়ল। তার মনে হলো যত বেশি দিন তারা চিজ ছাড়া এখানে পড়ে থাকবে তাদের অবস্থান তত বেশি খারাপ হতে থাকবে। হাউ বুঝতে পারল যে তারা সবই হারাতে বসেছে। একদিন হাউ নিজেকে নিয়ে হেসে উঠলো হাউ হাউ আমাদেরকে দেখ। আমরা দিনের পর দিন অপেক্ষা করার কাজ করেই যাচ্ছি আর বিস্মিত হয়ে ভাবছি কেন অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না। আমাদেরকে নিয়ে কেউ এখন হাসছে না-যদিও আমাদের আচরণ হাস্যকর। হাউ মেইজ ধরে চিজের জন্য আবার ছোটাছোটি করাকে পছন্দ করে। এর পেছনে ব্যর্থ হওয়ার ভয় এবং কোথায় যে চিজ পাওয়া যেতে পারে এ ব্যাপারে নূন্যতম আইডিয়ার অভাব। এই ভয় তাকে কাবু করে ফেলেছে দেখে নিজের নির্বুদ্ধিতায় নিজেকে নিয়ে সে হেসে উঠলো। সে হেম-কে জিজ্ঞেস করল আমাদের দৌড়াবার জুতা কোথায়? এটা পেতে অনেক সময় খুঁজতে হবে, কারণ তারা চিজ স্টেশন সি পাওয়ার পর তা দূরে সরিয়ে রেখেছিল ভেবেছিলো তাদের আর এগুলো দরকার হবে না। হেম দেখল তার বন্ধু এখন দৌড়াবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। তা দেখে সে বললো তুমি আবার দৌড়াতে যাচ্ছ না তো? কি যাচ্ছ নাকি? কেন তুমি আমার সাথে চিজ ফেরত পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছ না? কারণ তুমি তা আর পাচ্ছ না, হাউ বললো আমি তা করতে চাইনি, কিন্তু এখন আমি বুঝতে পারছি তারা আর আগের চিজ ফিরিয়ে দেবে না। এখন সময় নতুন চিজ খুঁজে নেবার। হেম যুক্তি দাড় করালো কিন্তু যদি বাইরে কোন চিজ না-থাকে? আর যদি থাকেও কিন্তু তুমি তা খোঁজে না পাও- তখন কি হবে?
পৃ্ষ্ঠা ১১ থেকে ২০
পৃষ্ঠা:১১
আমি জানি না-হাউ বললো। এ প্রশ্ন নিজেকে সে অনেকবারই করেছে এবং তাতেই ভয় পেয়ে এখানে পড়ে আছে। সে নিজেকে জিজ্ঞেস করল চিজ কোথায় পাওয়া যেতে পারে এখানে নাকি মেইজে? মনের মধ্যে সে একটা ছবি একে ফেললো। হাসি মুখে মেইজে সে চিজের সন্ধানে নিজেকে বিরামহীন অবস্থায় কল্পনা করল। কল্পনার এ ছবি তাকে বিস্মিত করলেও তাতে সে বেশ স্বস্তি খুঁজে পেলো। সে এখন নিজেকে মেইজের মধ্যেও হারিয়ে যেতে দেখল, মেইজের মধ্যে হেরে যেতে যেতে তার মধ্যে বিশ্বাস জেগে উঠলো পরিণামে সে ওখানে নতুন চিজ খুঁজে পাবে। সেখান থেকে সে নিজের অনেক কল্যাণও খুঁজে পাবে। সে আরো সাহস সঞ্চয় করলো। তারপর সে নিজের ভবিষ্যৎ কি হবে তা বাস্তবতার নিরিখে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাসযোগ্যভাবে কল্পনা করে নিল। সেখানে সে নিজেকে দেখতে পেলো নতুন চিজ সন্ধান করে তা ভোগ করতে। ছিদ্র যুক্ত সুস্বাদু চিজ ভোগরত অবস্থায় নিজেকে দেখতে পেলো। ভোগ করছে ব্রাইট অরেঞ্জ চেদ্দার ও আমেরিকান চিজ, ইটালিয়ান মোজারেলা এবং আরো আশ্চর্যজনক সফট ফ্রেঞ্চ কেমেমবার্ট চিজ। কিন্তু বাস্তবে তারা এখনো চিজ স্টেশন সি-তে পড়ে আছে। হাউ বললো-শোন হেম মাঝে মাঝে পরিবর্তন আসে এবং সবকিছু একভাবে থাকে না। যে কোন কিছুর পরিবর্তন হতে পারে। এটাই জীবন, জীবন চলতেই থাকে এবং আমাদেরও তাই। হাউ তার খাদ্যাভাবে শীর্ণ হয়ে যাওয়া সাথীর দিকে তাকাল এবং তাকে কিছু বলে বুঝাতে চাইলো কিন্তু বুঝলো হেমের ভয় রাগে পরিণত হয়েছে এবং সে শুনতে চাইবে না। হাউ তার বন্ধুর প্রতি কঠোর হতে চাইল না কিন্তু নিজেদের নির্বুদ্ধিতা দেখে নিজে
পৃষ্ঠা:১২
নিজেই হেসে উঠতে চাইল। হাউ যখন এ স্থান ছাড়ার প্রস্তুতি নিল তখন সে নিজেকে বেশ চাঙ্গা ভাবলো এবং বুঝতে পারলো সবশেষে নিজেকে নিয়েই হাসতে পারছে, নড়তে পারছে এবং সরতেও পারছে। হাউ হেসে উঠে ঘোষণা দিল এখন মেইজে দৌড়ানোর সময় হেম হাসল না, উত্তরও দিল না। হাউ এক পাথরের টুকরো নিয়ে তার সিরিয়াস চিন্তা, দেয়ালে লেখার প্রস্তুতি নিল যাতে হেম পরে হলেও বুঝতে পারে। হাউ তার লেখার চারপাশে একটি চিজের ছবি একে দিল এ আশায়-হেম এ ছবি দেখে হেসে উঠবে, উজ্জ্বল হয়ে উঠবে এবং নতুন চিজের পিছনে দৌড়াবার শক্তি পাবে। কিন্তু হেম তা দেখতে চাইল না। এতে লেখা ছিল-
পৃষ্ঠা:১৩
তুমি যদি পরিবর্তন না-চাও তবে তোমাকে শেষ হয়ে যেতে হবে।
পৃষ্ঠা:১৪
হাউ তখন মাথা চুলকালো, মেইজ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন হলো। সে চিজবিহিন অবস্থা থেকে কিভাবে বেরিয়ে আসবে তা নিয়ে ভাবলো। সে ভাবল হয়ত মেইজে কোন চিজই থাকবে না বা সে তা খুঁজে পাবে না। এধরনের ভয় ও বিশ্বাস তাকে নড়তে দিচ্ছিল না এবং শেষ করে ফেলছিল। হাউ হাসল, সে জানতো হেম ভাবছে কে আমার চিজ নিয়ে গেছে? কিন্তু হাউ ভাবছে কেন আমি উঠে দাঁড়ালাম না এবং আরো আগে চিজ খুঁজতে বেরুলাম না?মেইজ দৌড়ানো শুরু করতেই সে বেশ স্বস্তি অনুভব করলো। তার মনে হলো পরিচিত বলয়ে চষে বেড়াচ্ছে কিন্তু যদিও সে কোন চিজই খোঁজে না-পায় হাউ খুবই উদ্বিগ্ন ও বিস্মিত হয়ে ভাবল সে কি সত্যিই চিজের খুঁজে মেইজ ধরে দৌড়াতে চায়। তারপর সামনে রাখা দেয়ালে একটি জনশ্রুতি লিখে কিছুক্ষণ সেটা নিয়ে ভাবলো-
পৃষ্ঠা:১৫
যদি তুমি ভীত না-হয়ে থাক তবে তোমার কিছু করা উচিত।
পৃষ্ঠা:১৬
সে এও জানে মাঝে মাঝে কিছু বিষয়ে ভয় পাওয়া ভালো। যখন তুমি বুঝবে যে তোমার কিছু না-করার কারণে একটি ভুল হতে যাচ্ছে তখন তুমি নিশ্চিতভাবে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়বে। কিন্তু যদি এমন ভয়ের জন্য কিছুই করতে না পার- তখন সেটা হবে খুব খারাপ। সে তার ডানদিকে মেইজের সেদিকটার দিকে তাকালো যেদিকে এর আগে সে কখনো যায়নি এবং আবার ভয় পেয়ে গেলো।তারপর সে একটা দীর্ঘশ্বাস নিল, মেইজের ডানদিকে ঘুরে দাঁড়ালো এবং আস্তে আস্তে জগিং করে অজানার দিকে যাত্রা শুরু করল। পথ খুঁজে বের করা শুরু করতেই হাউ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ল। সে আরো দীর্ঘক্ষণ চিজ স্টেশনে সি-তে বসে বসে অপেক্ষা করলে কি হত? দীর্ঘ সময় ধরে চিজবিহীন থাকায় সে এমনিতেই দুর্বল হয়ে পড়েছে এ অবস্থায় মেইজে দৌড়াতে স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বেশি সময় নিচ্ছে এবং দৌড়ানো বেশ কষ্ট হয়ে পড়েছে। সে সিদ্ধান্ত নিল আর যদি ভবিষ্যতে এরকম অবস্থায় পড়ে তবে সে দ্রুত আরামের জিন্দেগী থেকে বের হয়ে পরিবর্তনের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেবে। তখন অনেক বিষয় সহজ হয়ে পড়বে।তখন হাউ একটা শীর্ণ হাসি দিয়ে ভাবল না-করার চেয়ে দেরিতে করাও ভালো। পরবর্তী কয়েকদিন হাউ এদিক সেদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিছু চিজ পেলেও এগুলো দিয়ে তার বেশি দিন চললো না। তার মনে মনে আশা ছিল সে অনেক বেশি চিজ পাবে যা থেকে হেমের জন্য কিছু নিতে পারবে এবং তাকে মেইজে খুঁজে বেড়াতে উৎসাহ জোগাবে। কিন্তু হাউ খুব একটা ভরসা পাচ্ছিল
পৃষ্ঠা:১৭
না। স্বীকার করতে তার দ্বিধা ছিল না-যে মেইজে সে অনেক সন্দিহান হয়ে পড়েছিল। তার মনে হচ্ছিল সে বের হওয়ার পর অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হবে। যখন সে ভাবে সে কিছুটা সফল হচ্ছে তখনই সে কোথায় যেন হারিয়ে যায়। তার মানে দুইপা আগালে এক পা পিছোয় এই ছিল অবস্থা। এটা ছিল এক চ্যালেঞ্জ কিন্তু তাকে স্বীকার করতে হলো চিজের জন্য মেইজে ফিরে আসাকে সে যতটুকু ভয় পাচ্ছিল অবস্থা ততটা খারাপ ছিল না। সময় যত যাচ্ছিল সে ততই বিস্মিত হয়ে ভাবছিল নতুন চিজ পাওয়ার আশাটা বাস্তব সম্মত ছিল কি না? সে ভাবছিল নতুন চিজ চিবানোর চেয়ে কামড় দিতে বেশ ভালো লাগবে। তার হাসি পেলো এই ভেবে-দূর যা এই মুহূর্তে চিবানোর মত তার হাতে কিছুই নেই। যখন হতাশা নেমে আশে তখনই সে মনে করার চেষ্টা করে যে এই অবস্থা আগের চিজবিহীন অবস্থা থেকে অনেক ভালো। যতই সে খারাপ থাক না কেন সে এখন নিয়ন্ত্রণ নিতে পারছে। আগে সেখানে অবস্থার উপর নিজেকে ছেড়ে দেয়া ছাড়া কিছুই করার ছিল না।তারপর সে ভাবল যদি স্লিফ ও স্কারি দৌড়াতে পারে সেও পারবে। এরপর সে আবার পিছনের দিনগুলোর কথা চিন্তা করে দেখল চিজ স্টেশন সি একদিনেই খালি হয়ে যায়নি, অথচ এর আগে তারা সে রকম কখনো ভাবেনি। চিজের স্টক কমে যেতে যেতে শেষ হওয়ার পথে ছিল এবং বাসি হয়ে যাওয়া চিজ খেতে আর সুস্বাদু লাগছিল না। বাসি চিজের উপর যে ছত্রাক জমা হচ্ছিল তা তারা খেয়াল করেনি। স্বীকার করতে হয় খেয়াল করলেই তা দেখতে পেত। কিন্তু তারা সে চেষ্টা করেনি। হাউ
পৃষ্ঠা:১৮
এখন বুঝতে পারল সে যদি সবসময় খেলায় রাখত এবং অনুমান করত তবে পরিবর্তনটা তাকে বিস্মিত করতে পারত না। সম্ভবত স্নিফ ও স্কারি তা করেছিল। তাই তারা বিস্মিত হয়নি। সে মনে মনে ঠিক করে রাখল এখন থেকে খুব সতর্ক থাকবে। পরিবর্তন সে প্রত্যাশা করবে এবং বুঝে নেবে কোথায় কোথায় পরিবর্তন এসেছে। কখন পরিবর্তন ঘটতে পারে তা বুঝে নেয়ার পূর্বানুমান ক্ষমতার উপর সে আস্থা রাখবে, এর সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টায় থাকবে। এরকম ভাবনার বিরতি দিয়ে সে তার দেয়ালে লিখল-
পৃষ্ঠা:১৯
সময় সময় চিজের গন্ধ নিতে থাক তাহলে তুমি বুঝতে পারবে কখন তা বাসি হচ্ছে
পৃষ্ঠা:২০
চিজবিহীন থাকার সময় দীর্ঘ মনে হয়েছিল। হাউ এক বিরাট চিজ স্টেশনের সন্ধান পেলো। এই স্টেশনটা মনে আশার সঞ্চার করল। তখন সে চরম হতাশ হয়ে শুকে দেখতে পেলো পুরো চিজই বাসি হয়ে গেছে। চিজের খুঁজে মনে হলো অনেক দিন কেটে গেল। হঠাৎ সে এক বিরাট চিজ স্টেশনে পৌঁছল। দেখতে এই স্টেশনটাকে খুব সম্ভাবনাময় মনে হলো। কিন্তু যখন সে ভিতরে ঢুকল সে চরম হতাশ হয়ে উঠলো চিজ স্টেশনটা একদম খালি। এই না-পাওয়াটা বারবার ঘটছে। এই খোঁজা খোঁজিটা সে ছেড়ে দিতে চাইল। হাউ দিন দিন শরীরের বল হারিয়ে ফেলছিল। এবং মনে হলো সে আর বাঁচবে না। সে চাইল চিজ স্টেশন সি- তে ফিরে যেতে। ফিরে গেলে সে আর একা হয়ে পরবে না, সেখানে সে হেমকে পাবে তখন সে আবার নিজেকে প্রশ্ন করল। যদি সে সত্যি সত্যি ভয় না-পেয়ে থাকে তবে তার কি করা উচিত? হাউ ভাবল সে তার ভয়কে অতিক্রম করতে পেরেছে। কিন্তু সে যে বারবার ভয় পাচ্ছিল তা সে নিজের কাছে স্বীকার করতে চায়নি। আসলে সে নিশ্চিত ছিল না-যে ভয় পাচ্ছিল কি না। কিন্তু সে একা হয়ে পড়ায় ভয় পাচ্ছিল। হাউ তা জানতো না, কিন্তু সে পিছনে পড়ে যাচ্ছিল। কারণ তার কিছু বিশ্বাস যার জন্য সে ভীত হয়ে পড়ে। হেম যদি নড়েচড়ে উঠত তবে হাউ বিস্মিত হত। সে হয়ত ভয়ে এখনও মূর্তি হয়ে আছে। হাউ মনে করে দেখল মেইজে তার সবচেয়ে ভালো লাগা সময়টাকে। আর সেটা ছিল সে যখন মেইজে দৌড়াচ্ছিল।নিজেকে মনে করিয়ে দেয়ার জন্য বা তার বন্ধু হেম যেন অনুসরণ করতে পারে সে জন্য সে তার দেয়ালে লিখল-
পৃ্ষ্ঠা ২১ থেকে ৩০
পৃষ্ঠা:২১
নতুন নতুন দিকে দৌড়াদৌড়ি নতুন নতুন চিজ পেতে তোমাকে সাহায্য করবে।
পৃষ্ঠা:২২
অন্ধকার গলির দিকে সে তাকিয়ে দেখল এবং নিজের ভয়কে অনুভব করল। সামনে কি আছে? এটা কি খালি? নিশ্চয়ই বিপদ সেখানে ঘাপটি মেরে আছে, কি কি ঘটতে পারে সে এমন সব বিপদ চিন্তা করতে লাগল, এমনকি সে মরে যাওয়ার আশংকা করছিল। তখন সে নিজে নিজে হেসে উঠলো, বুঝতে পারল এই ভয় পাওয়া থাকে আরো বিপদে ফেলে দিচ্ছে। তার যা করা উচিত সে তাই করল। কারণ সে ভয় পায়নি। সে নতুন দিকে দৌড়াতে থাকল। অন্ধকার করিডোর ধরে দৌড়াতে দৌড়াতে সে হাসতে শুরু করল। যদিও সে উপলব্ধি করতে পারছিল না কিন্তু সে বুঝতে পারল কি একটা জিনিস তার আত্মাকে পুষ্ট করছে। তার সামনে কিছু একটা হতে যাছে সে তা বিশ্বাস করল যদিও সে জানতো না- কি তার কপালে আছে। অবাক হয়ে দেখল সে বেশি বেশি এনজয় করছে এখন। কেন আমার এত ভালো লাগছে? সে বিস্মিত হলো আমার কোন চিজ নাই এবং আমি জানি না-কোথায় যাচ্ছি।সে শুধু জানে তার ভালো লাগছে। নিজের দেয়ালে লেখার জন্য থামল-
পৃষ্ঠা:২৩
যখন তুমি আর ভয় পাবে না তখন তোমার ভালো লাগবে।
পৃষ্ঠা:২৪
হাউ উপলব্ধি করতে পেরেছিলো যে, সে ভয়ের কাছে বন্দি হয়ে পড়েছিলো কিন্তু চিজের সন্ধানে নতুন দিকে ছোটাছোটি তার ভয় দূর করে দিল। মেইজে এখন একটা শীতল বাতাস বইছে। এবং সে সতেজ হয়ে ওঠেছে। গভীরভাবে সে কয়েকবার নিঃশ্বাস নিল আর তাতে আরো সঞ্জীবিত হতে থাকল। যখনই সে ভয় থেকে মুক্ত হলো তখনই সে জীবনকে এনজয় করতে থাকল। যতটুকু ভেবেছিলো তা থেকে অনেক অনেক বেশি।অনেক দিন সে এরকম আনন্দ আর পায়নি। সে ভুলেই গিয়েছিলো চিজের সন্ধানে ছোটাছোটি কত মজার। আরো বেশি ভালো লাগার জন্য হাউ তার মনের মধ্যে একটি ছবি আঁকতে থাকল। সে আরো বাস্তব ছবি আঁকতে থাকল নিজেকে তার পছন্দের চিজের মাঝখানে বসে থাকতে দেখল। তার পছন্দের চিজ খেতে দেখল। নিজেকে আরো বেশি এনজয় করতে দেখল। তখন সে কল্পনা করতে থাকল কি মজার চিজগুলো সে ভোগ করেছে। যত পরিষ্কারভাবে মনের মধ্যে চিজ ভোগ করার ছবি আঁকতে থাকল সেটা তত বেশি বাস্তবও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে থাকল। সে বুঝতে পারল যে, সে চিজ এখনি পেতে যাচ্ছে সে লিখল-
পৃষ্ঠা:২৫
কল্পনায় যদি তুমি নতুন চিজ ভোগ করতে থাক, বাস্তবে তুমি নতুন চিজের দিকেই চলে যাবে।
পৃষ্ঠা:২৬
হাউ কি হারিয়েছে তার পরিবর্তে কি পেতে পারে তাই ভাবতে থাকল। সে অবাক হয়ে ভাবলো কেন সে ভেবেছিলো যে কোন পরিবর্তন হলেই সব নষ্ট হয়ে যাবে। তখন সে বিশ্বাস করে পরিবর্তনে অনেক ভালো কিছু আনতে পারে। কেন আমি আগে এরকম চিন্তা করলাম না? নিজেকে সে জিজ্ঞেস করল। সে মেজের মধ্যে আরো বেশি শক্তি ও ক্ষিপ্রতা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে ছিল। নতুন চিজ স্টেশন পাওয়ার আগেই সে উত্তেজিত হয়ে উঠলো। উত্তেজিত হলো ঐ চিজ স্টেশনের প্রবেশপথে ছোট ছোট টুকরা টুকরা চিজ পড়ে থাকতে দেখে। খুবই উত্তেজিত হয়ে সে নতুন চিজ স্টেশনে প্রবেশ করল। হতাশ হয়ে দেখল স্টেশন সম্পূর্ণ খালি। কেউ না-কেউ এখানে ছিল। স্টেশনন্টা খালি করেই দুই একটা টুকরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রেখে চলে গেছে। সে বুঝতে পারল তার আরো দ্রুত ছোটা দরকার। যাতে সে প্রচুর পরিমাণের নতুন চিজ পেতে পারে। আবার সে ফিরে গিয়ে হেমকে তার সঙ্গে জয়েন করাতে পারে কিনা সে চেষ্টার সিদ্ধান্ত নিল। পুরানো পথে ফেরার সময় সে আবার থেমে নিজের দেয়ালে লিখল-
পৃষ্ঠা:২৭
পুরোনো চিজকে যত দ্রুত ছেড়ে যাবে তত শীঘ্রই তুমি নতুন চিজ পাবে।
পৃষ্ঠা:২৮
পুরনো চিজ স্টেশন সি-তে ফিরে সে হেমকে দেখতে পেলো। তাকে নতুন দুই এক টুকরা চিজ অফার করল, কিন্তু হেম তা ফিরিয়ে দিল। হেম তার বন্ধুর সহানুভূতির প্রশংসা করে বললো-আমার মনে হয় আমি নতুন চিজ পেতে চাই না। আমি যেটা ভোগ করতাম এটা সেটা নয়। আমি আমার চিজটাই ফেরত চাই। না পাওয়া পর্যন্ত আমি নিজেকে পরিবর্তন করব না। হাউ হতাশ হয়ে মাথা নাড়ল এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে নিজের পথে ফেরত চলল। অনেক দূর গিয়ে মেইজে পৌঁছাল। সে তার বন্ধুকে মিস করল। কিন্তু সে বুঝতে পারল যে, তার কাজটা সে পছন্দ করে। এমনকি সে চিজের নতুন বড়ো সাপ্লাই পাওয়ার আগেও সে খুব আনন্দিত। তার মানে শুধু চিজ পাওয়াটাই আনন্দ না-বরং তার পিছনে ছোটাও আনন্দ। মনে আনন্দ থাকায় এখন আর ভয় পাচ্ছে না। সে যা করছে তা সে পছন্দ করে বলে করছে। তাই হাউ আর আগের মত চিজবিহীন স্টেশন সি-তে অপেক্ষার সময়ের মত নিজেকে দুর্বল ভাবছে না। সে বুঝতে পারছে যে, তার ভয় আর তাকে থামিয়ে দিতে পারছে না। এবং সে নতুন পথেই ছুটছে। এই ছোটা তাকে সজীব করে রাখছে, শক্তি যোগাচ্ছে। সে বুঝতে পারছে যে, যা চাইছে তা পাওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। সে উপলদ্ধি করছে যে, সে যা চায় তা পেয়েই গেছে। এরকম উপলদ্ধিতে সে হেসেই ওঠল।
পৃষ্ঠা:২৯
/ চিজবিহীন স্টেশনে বসে থাকার চেয়ে মেইজে চিজের সন্ধানে ছোটাছুটি করাটাই নিরাপদ।
পৃষ্ঠা:৩০
হাউ বুঝতে পারলো, যে ভয় সে আগে পাচ্ছিল তা বাস্তবে এত ভয়ের ছিল না। মনের মধ্যে থাকা ভয় বাস্তব অবস্থা থেকে অনেক বেশি ভয়ের হয়ে থাকে। সে আর চিজ খুঁজে পাবে না এই ভয়ে আড়ষ্ট ছিল। নতুন চিজের দিকে তাকাতেও চাচ্ছিল না। কিন্তু তার ছোটাছুটির শুরু থেকেই করিডোরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনেক চিজই সে দেখতে পেলো যা থাকে ছুটতে উৎসাহিত করে যাচ্ছে। এখন সে আরো বেশি পেতে ছুটছে। সামনের দিকেই ছোটাই উত্তেজনার। তার পুরনো চিন্তা ছিল ভয়ে পরিপূর্ণ। সে ভাবত সে আর পর্যাপ্ত চিজ পাবেই না অথবা পেলে তা দীর্ঘসময় ধরে পাবে না। ভালো কিছুর চেয়ে সে বেশি ভাবত মন্দ ফলাফল নিয়ে।কিন্তু চিজ স্টেশন সি-তে ছেড়ে দেয়ার পরই তার চিন্তা পরিবর্তন এসেছে। সে ভাবত চিজ সরে যেতে পারে না এবং পরিবর্তনটা ঠিক হয়নি।এখন সে ভাবে পরিবর্তন হওয়াটাই স্বাভাবিক সচরাচর তা হয়েই থাকে। কেউ তা চায় বা না-চায়। যদি কেউ পরিবর্তন না-চায় তবেই সে অবাক হয়ে উঠে। তার বিশ্বাসটা পরিবর্তিত হয়ে গেছে বুঝতে পেরে সে লিখল-
পৃ্ষ্ঠা ৩১ থেকে ৪০
পৃষ্ঠা:৩১
পুরাতন ধারণা ও বিশ্বাস তোমাকে নিয়ে যাবে না-নতুন চিজের কাছে।
পৃষ্ঠা:৩২
হাউ এখনো নতুন চিজ পায়নি তবে সে মেজে ছুটে বেড়াচ্ছে। সে কি শিখল তাই ভাবতে থাকল। হাউ ভাবতে থাকল তার নতুন বিশ্বাস তার আচরণ পরিবর্তন করে দিচ্ছে। সে চিজবিহীন স্টেশনে থাকাকালীন অবস্থা থেকে ভিন্ন পথ অনুসরণ করছে। সে জানে বিশ্বাস পরিবর্তনে কাজেরও পরিবর্তন ঘটবে। তুমি বিশ্বাস করতে পার-যে কোন পরিবর্তন তোমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং তোমাকে বাধাগ্রস্ত করবে। অথবা তুমি এ-ও বিশ্বাস করতে পারবে যে পরিবর্তন নতুন চিজ পেতে তোমাকে সাহায্য করবে এবং তুমি পরিবর্তনকে স্বাগত জানাবে। সবই নির্ভর করবে তোমার বিশ্বাসের উপর। সে তার দেয়ালে লিখল-
পৃষ্ঠা:৩৩
নতুন নতুন চিজ যখন পাওয়া শুরু করবে তখন তুমি তোমার চলার পরিবর্তন ঘটাবে।
পৃষ্ঠা:৩৪
হাউ বুঝতে পারল যদি আরেকটু আগে সে পরিবর্তনটা মেনে নিয়ে চিজ স্টেশন সি ছাড়তে পারত তাহলে আজ ভালো অবস্থানে থাকত। সে এখন শরীরে অনেক বেশি শক্তি পাচ্ছে এবং নতুন চিজ পাওয়ার চ্যালেঞ্জের সাথে নিজেকে খুবই মানিয়ে নিতে পেরেছে। ঘটে যাওয়া পরিবর্তনকে অস্বীকার করে সময় নষ্ট না করে বাস্তবে সে যদি পরিবর্তনটাকে প্রত্যাশা করত তবে সে অনেক ভালো থাকত। সে আরো একবার কল্পনা করতে লাগল। কল্পনায় সে নিজেকে নতুন চিজ খুঁজতে ও তার টেস্ট নিতে দেখল। সে মেইজের অজানা এলাকায় খোঁজার সিদ্ধান্ত নিল। এবং অল্প স্বল্প চিজের এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখল। হাউ আবার শক্তি ও বিশ্বাস খুঁজে পেলো। সে কিভাবে এই অবস্থায় আসল তা চিন্তা করে সে খুশিই হলো এই ভেবে যে, তার বিভিন্ন অবস্থায় সে সময় সময় দেয়ালে লিখে রেখেছে, তার বিশ্বাস হেম তা অনুসরণ করে মেইজ ধরে ছোটাছুটি করে তার অবস্থানে পৌছতে পারবে-যদি সে কখনো চিজ স্টেশন সি ছেড়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। হাউয়ের এই বিশ্বাস ছিল যে, সে সঠিক পথেই অগ্রসর হচ্ছে। দেয়ালে লেখা তার হাতের নির্দেশনাগুলো পড়ে হেমের নিজের পথ খুঁজে পাবার সম্ভাবনা নিয়ে সে ভাবছিলো। এতক্ষণ ধরে যা চিন্তা করছিলো তা সে আবার দেয়ালে লিখতে বসল-
পৃষ্ঠা:৩৫
ছোট খাট পরিবর্তনের দিকে যত আগে চোখ পড়বে। বড়ো পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে তা তত সহায়তা করবে।
পৃষ্ঠা:৩৬
এখন হাউ অতীতকে ফেলে এসেছে এবং বর্তমানের সাথে এডজাস্ট করার চেষ্টা করছে। মেইজে সে আরো অধিক শক্তি ও গতি নিয়ে ছুটতে থাকল। মনে করতে থাকল ভালো কিছু আসতে সময় লাগবে না।তার মনে হতে লাগল যে, সে অনেক দিন থেকেই এই মেইজে ছোটাছুটি করছে। তার পুরো জার্নি অথবা জার্নির এই অংশ দ্রুত ও আনন্দের সাথে শেষ হতে চলল। হিউ এমন এক করিডোরে প্রবেশ করল যা তার কাছে নতুন মনে হলো। কর্ণার ঘুরেই সে নতুন নতুন চিজ দেখতে পেলো। এটা হলো চিজ স্টেশন N। যখই ভিতরে প্রবেশ করল সে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। তার দেখা সবচেয়ে বড়ো চিজের স্টক স্তূপাকারে সাজানো রয়েছে। এরকম বিশাল ভাণ্ডার সে আগে কখনো দেখেনি। যে সব চিজকে দেখতে পেলো তার সবগুলো সে চিনতেও পারল না। কারণ এর আগে এগুলো দেখেওনি। তখন সে ভাবল এসব বাস্তব না-কল্পনা-যতক্ষণ না তার পুরোনো বন্ধু স্নিফ ও স্কারি-কে দেখতে পেলো। স্লিফ ও স্কারি মাথা নেড়ে হাউ-কে স্বাগত জানাল। তাদের মোটা হয়ে যাওয়া ছোট পেটগুলো বলে দিচ্ছে যে তারা কিছু দিন ধরে এই ভাণ্ডারে আছে। হাউ দেরি না-করে তাদেরকে হ্যালো জানাল এবং তার পছন্দের চিজগুলোতে কামড়াতে থাকল। সে তার জুতো খুলে ওদের একটির ফিতা দিয়ে আরেকটি বেঁধে গলায় ঝুলিয়ে রাখল যাতে প্রয়োজন হলে খুঁজতে না হয়।
পৃষ্ঠা:৩৭
স্নিফ ও স্কারি তা দেখে হেসে উঠলো। তারা স্বসম্মানে তাদের মাথা নাড়াতে থাকল। হাউ তখন জাম্প দিয়ে নতুন চিজের উপরে পড়ল। পেট পুরে খাওয়া হয়ে গেলে সে ফ্রেশ একটা চিজ তুলে এনে টোস্ট বানিয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো হুররে- চেঞ্জ।চিজ এনজয় করতে করতে হাউ কি শিখেছে তার রিপ্লে করে দেখল। সে বুঝতে পারল যখনই সে পরিবর্তনকে ভয় পাচ্ছিল তখন সে পুরাতন চিজের মায়ায় পড়ে রইল যদিও সেখানে কোন চিজ ছিল না। এ অবস্থান থেকে তার পরিবর্তনটা কেমনে হলো। এটা কি অনাহারে মরে যাওয়ার ভয়ে? হাউ হেসে উঠলো কারণ এটাই আসলে কাজ করেছিল।আবার সে হেসে উঠে ভাবল যখনই সে নিজেকে নিয়ে হাসতে শিখেছে তখনই তার চিন্তার পরিবর্তন হয়েছে। সে নিজের বোকামি দেখে নিজেকে নিয়ে হেসে উঠেই পরিবর্তনের দিকে পা বাড়িয়েছিল। সে তার ইঁদুর বন্ধু স্নিফ ও স্কারির ছোটাছুটি থেকে কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় শিখেছিল। ওরা সবকিছু সহজভাবে নেয়। তারা অতিরিক্ত বিশ্লেষণও করেনি বা অতিরিক্ত জটিল করে তুলেনি কিছুই। যখন পরিবর্তন এসেছে চিজ সরে গেছে তারাও পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে এবং চিজের সন্ধানে ছোটাছোটি শুরু করে দিয়েছে। হাউয়ের তা মনে রাখার দরকার ছিল। হাউ তার শক্তিশালী ব্রেন ব্যবহার করতে পারত যা দিয়ে ছোট মানুষেরা অনেক ভালো করতে পারে। বাস্তবতাকে সে আরো অধিক বিশ্লেষণ করে ভালো কিছু পেতে চাইল। অতীতে করা তার ভালো কাজ একনজর দেখে নিল এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় সেগুলো ব্যবহার করতে চাইল। সে
পৃষ্ঠা:৩৮
জানলো যে কেউ পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া শিখতে পারে। প্রত্যেকটি বিষয়কে সহজভাবে নেয়া শিখতে হবে, শিখতে হবে নমনীয়তা এবং দ্রুত ছোটা। যে কোন বিষয়কে অতিরিক্ত জটিল করে তোলা থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশ্বাসের জন্য বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। ছোট ছোট পরিবর্তনকে আগে ভাগেই আন্দাজ করা যায়। সে জানতো তাকে পরিবর্তনের সাথে আরো দ্রুত খাপ খাওয়াতে শিখতে হবে। যদি কেউ সময়মত খাপ খাওয়াতে না পারে, সে আদৌ তা করতে পারবে না।তাকে স্বীকার করতেই হলো সে পরিবর্তনের পথে সবচেয়ে বড়ো বাধা আসে নিজে থেকে এবং যতক্ষণ না নিজেকে পরিবর্তন করা যায় ততক্ষণ ভালো কিছু ঘটে না। সম্ভবত সবশেষে বেশি গুরুত্বপূর্ণ উপলব্ধি হলো-সব সময় বাইরে নতুন নতুন চিজের ভাণ্ডার যে রয়েছে এটা বিশ্বাস করা-কেউ তা স্বীকার করুক আর নাই করুক। কেউ যখন ভিতরের ভয়কে দূর করে এডভেঞ্চারে নেমে পড়ে তখন সে পুরষ্কৃত হয়। সে জানে যে কিছু ভয়কে স্বীকার করা দরকার যা তাকে বাস্তব ভয় থেকে দূরে রাখবে। কিন্তু সে এত জানে যে, তার অধিকাংশ ভয় অযৌক্তিক এবং প্রয়োজনে পরিবর্তিত হওয়া থেকে বিরত রাখে। এসব যদিও সে পরিবর্তনকে পছন্দ করে না, কিন্তু সে জানে এসব পরিবর্তন তার জন্য এখন আশীর্বাদ নিয়ে এসেছে যা তাকে ভালো চিজের স্তূপের কাছে নিয়ে এসেছে। সে এখন নিজে অনেক ভালো চিজের মালিক হয়ে উঠেছে। সে যা শিখেছে তা আবারো মনে করার চেষ্টা করল। সে তার বন্ধু হেমকে নিয়ে ভাবল। হেম যদি দেয়ালে লেখা তার উপলব্ধিগুলোর একটিও পড়ে দেখত।
পৃষ্ঠা:৩৯
হেম কি একবারও ছোটার সিদ্ধান্ত নেবে না? যদি সে একটিবার মেইজে ঢুকত এবং তার জীবনকে ভালো করার পথ আবিষ্কার করতে পারত। অথচ সে এখনো নিজের মাথা হাতুড়ি দিয়ে ঠোকড়াচ্ছে কারণ সে পরিবর্তন চায় না।হাউ ভাবল আবারও চিজ স্টেশন সি-তে ফিরে যাবে যাতে হেমকে খুঁজে পেতে পারে। যদি সে হেমকে খুঁজে পায় তবে কিভাবে দুঃসময়কে অতিক্রম করতে হয় তা তাকে দেখাতে পারবে। কিন্তু হাউ তো এরই মধ্যে তার বন্ধুকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছে। হেমকে তার নতুন পথ চিনে নিতে হবে। তার জন্য ভয়কে দূর করে আরাম আয়েশ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কেউ তার জন্য তা করবে না। যে কোনভাবেই তাকে পরিবর্তিত হওয়ার লাভটা বুঝে নিতে হবে। হাউ তার বন্ধুর জন্য চলার পথটাকে চিহ্নিত করে রেখেছে। যাতে সঠিক পথ বেছে নিতে পারে। তার জন্য দেয়ালে লেখা নির্দেশনাগুলো তাকে পড়তে হবে। সে আবারও ভাবল বৃহত্তম চিজ স্টেশন N-এর দেয়ালে যা শিখেছে তার সারমর্ম লিখে রাখবে। তার শেখা বিষয়গুলো চারপাশে সে বড়ো একখণ্ড চিজের ছবি আঁকল এবং লেখাগুলো পড়ে হাসতে থাকলো।
পৃষ্ঠা:৪০
দেয়ালে লেখা হ্যান্ডরাইটিংগুলো:পরিবর্তন ঘটে ফলে চিজগুলো সরে যায়
পরিবর্তন অনুমান:চিজ যে সরে যাবে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকো
পরিবর্তন মনিটর করা:প্রায়ই চিজ শুকতে থাক যাতে তুমি বাসি হওয়ার আগে টের পেতে পার
পরিবর্তনের সাথে দ্রুত খাপ খাওয়ানো:যত দ্রুত তুমি পুরাতন চিজকে চলে যেতে দেবে তত দ্রুত তুমি নতুন চিজ এনজয় করতে পারবে পরিবর্তন চিজের সাথে সাথে ছুটতে থাকা
পরিবর্তন এনজয় করা: এডভেঞ্চারে অংশ নিয়ে নতুন চিজের স্বাদ এনজয় কর
পরিবর্তনের জন্য তাড়াতাড়ি প্রস্তুত হও :এবং বার বার তা এনজয় করো।
পৃ্ষ্ঠা ৪১ থেকে ৫০
পৃষ্ঠা:৪১
হাউ উপলব্ধি করতে চাইল যে, সে হেমের সাথে থাকা চিজ স্টেশন সি থেকে কত দূরে চলে এসেছে। এবং এ-ও জানতো আরো আরামের থাকার জন্য ফিরে যাওয়াও সহজ। তাই প্রতিদিনই সে চিজ স্টেশন N-এর চিজগুলো চেক করে চিজের অবস্থা বুঝার চেষ্টা করত। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনে সারপ্রাইজ না- হওয়ার জন্য যা কিছু করা সম্ভব তার সবই সে করত। হাউয়ের যদিও এখনো চিজের বিরাট সাপ্লাই হাতেই আছে, তবুও সে মেইজে প্রায়ই ছুটত এবং নতুন নতুন এলাকা আবিষ্কার করতো, যাতে যা ঘটেছে তার সংস্পর্শে থাকা যায়। সে জানতো বাস্তব অবস্থা জানাটা ঘুমিয়ে থাকার চেয়ে অনেক নিরাপদ।তখনই হাউ মেইজে কারো চলার শব্দ শুনতে ফেল। শব্দ যতই বড়ো হতে থাকলো সে ততই বুঝতে পারল কেউ না-কেউ আসছে। হেম কি আসছে? সে কি কর্ণারটা এখন অতিক্রম করছে।হাউ প্রার্থনা করল এবং আগের মতই আশা করল যাতে তার বন্ধুটি শেষমেষ পরিবর্তিত হতে সক্ষম হয়ে উঠে………
পৃষ্ঠা:৪২
চিজের সঙ্গে চল এবং তা এনজয় কর শেষ, না কি আবার নতুন করে শুরু?
পৃষ্ঠা:৪৩
দিন শেষের আলোচনা:মাইকেল যখন গল্প বলা শেষ করল, সে রুমের চারদিকে তাকালো এবং দেখলো তার আগের ক্লাসমেটরা তার দিকে থাকিয়ে হাসছে। অনেকেই থাকে ধন্যবাদ দিয়ে জানালো এই গল্প থেকে তারা অনেক কিছু শিখেছে।নাথাল জিজ্ঞেস করল তোমরা আবার মিলিত হয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করার ব্যাপারে কি ভাবছ? অনেকেই বললো তারা এ বিষয়ে কথা বলতে চায় এবং তাই তারা ডিনারের পূর্বে ড্রিংক করার সময়ে মিলিত হওয়ার আয়োজন করল। বিকেলে তারা যখন হোটেল লবিতে মিলিত হলো তখন তারা একে অন্যকে চিজ পাওয়া নিয়ে ঠাট্টা মসকরা শুরু করল এবং নিজেদেরকে মেইজের মধ্যেই আবিষ্কার করল। এঞ্জেলা স্বভাবজাত ভালো স্বরেই দলের সবাইকে জিজ্ঞেস করল, এই গল্পের কোন চরিত্রটি তোমার? স্লিফ না স্কারি, হেম না হাউ? কার্লোস উত্তরে বললো ভালো কথা। আমি এই বিকেলে গল্পটি নিয়ে ভেবেছি। আমার পরিষ্কারভাবে মনে আছে সেই সময়ের কথা যখন আমার একটি খেলনার দোকান ছিল এবং যখন আমি পরিবর্তনের সাথে এনকাউন্টার হয়েছিলো। আমি স্নিফ হতে পারিনি। পরিস্থিতি শুঁকে নিয়ে পরিবর্তনকে আগেভাগে আমি দেখতে পারিনি। এবং স্কারিও হতে পারিনি কারণ আমি রাতারাতি একশনে যেতে পারিনি।
পৃষ্ঠা:৪৪
আমি হেম থেকে বেশি-যে পরিচিতি পরিবেশেই থেকে যেতে চায়। সত্য হলো আমি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারি না। এমনকি আমি পরিবর্তনকে সহ্য করতে পারি না। মাইকেল যে মনে করে এইতো সেদিন কার্লোস আর স্কুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। জিজ্ঞেস করল এখানে কি আলোচনা হচ্ছে বন্ধু? কার্লোস বললো, কাজে অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন। মাইকেল হেসে উঠলো, তুমি কি চাকুরিচ্যুত হয়েছো? ভালো কথা, যে কথা শুধু বলতে চাই আমি নতুন চিজের সন্ধানে বের হতে চাইতাম না। আমি ভাবতাম আমার ব্যাপারে পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। তাই যখন পরিবর্তন হলো আমি আপসেট হয়ে পড়লাম।পুরোনো অন্য ক্লাসমেটরা বেশ চুপচাপ ছিল এতক্ষণ। এখন কথা বলতে ওদের ইচ্ছে হচ্ছিলো এদের একজন ফ্র্যাংক সে মিলিটারিতে জয়েন করেছিল। হেম আমার এক বন্ধুর কথা মনে করিয়ে দিল-ফ্র্যাংক বললো তার বিভাগ বন্ধ হয়ে গেল। সেতা বুঝতে পারেনি। তারা তাদের লোকজনদের অন্য জায়গায় সরিয়ে দিচ্ছিল। আমরা তার সঙ্গে কথা বললাম। তাকে বুঝাতে চাইলাম নমনীয় হতে পারলে অনেক বেশি সুবিধা হবে। কিন্তু সে পরিবর্তিত হতে রাজি হলো না। সে একমাত্র ব্যক্তি যার ডিপার্টমেন্ট বন্ধ হওয়ার পর অবাক হয়ে উঠলো। এখন সে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে এডজাস্ট করতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে।জেসিকা বললো, আমি ভাবিনি এরকম পরিবর্তন আমার জীবনে আসবে কিন্তু আমার চিজ দু’বার সরে গিয়েছিল। বিশেষভাবে তা হয়েছিল আমার ব্যক্তিগত জীবনে। কিন্তু আমরা এ নিয়ে পরে কথা বলবো।
পৃষ্ঠা:৪৫
অনেকেই হেসে উঠলো, নাহান ছাড়া। ‘মনে হয় এটাই আসল পয়েন্ট’। নাহান বললো, চেঞ্জ আমাদের সবার জীবনেই ঘটছে।সে যোগ করল, যদি আমার পরিবারের সদস্যরা চিজের গল্পটা আগে শুনতে পারত। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের ব্যবসাতে আসা পরিবর্তনটা আমরা আঁচ করতে পারিনি। কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। আমাদের অনেকগুলো স্টোর বন্ধ করে দিতে হয়েছে।সভার অনেকেই অবাক হলো। কারণ সবাই জানতো নাথান খুবই লাকি। সে নিরাপদভাবে বছরের পর বছর ধরে ব্যবসা করে যাচ্ছে।কি হয়েছিলো জেসিকা জানতে চাইল। আমাদের ছোট ছোট দোকানের চেইন হঠাৎ করে ওল্ড ফ্যাশনের হয়ে গেল। কারণ শহরের বড়ো বড়ো মেগাস্টোর বিরাট বিনিয়োগ নিয়ে ব্যবসা শুরু করল। এসব দোকানে ক্রেতারা কমদামে পণ্য কিনতে পারছে। আমরা ওদের সাথে কম্পিটিশনে পেরে উঠলাম না।আমি দেখেছি স্লিফ ও স্কারি না-হয়ে আমরা ছিলাম হেমের মত। আমরা যেখানে ছিলাম সেখানেই পড়ে থাকলাম, পরিবর্তনে সাড়া দিলাম না। যে পরিবর্তন আসছিলো আমরা তা পাত্তা দিতাম না। এতে এখন আমরা সমস্যায় পড়ে গেলাম। আমাদের হাউয়ের কাছ থেকে অনেক শিক্ষা নেয়া উচিত ছিল। কারণ আমরা নিজেদের নিয়ে হাসতে পারিনি এবং নিজেদেরকে পরিবর্তন করতে পারিনি।লোরা একজন সফল ব্যবসায়ী ছিল। সে এতক্ষন শুনছিলো। এ পর্যন্ত খুব কম কথা বলেছে সে। ‘আমিও এ গল্প নিয়ে বিকেলে চিন্তা করেছি।’ সে বললো, আমি ভাবলাম কিভাবে হাউ-এর মত হতে পারি। নিজের ভুলগুলো বুঝতে পারি, নিজেকে নিয়ে হাসতে পারি, নিজেকে পরিবর্তন করে আরো ভালো করতে পারি। সে
পৃষ্ঠা:৪৬
বললো আমি জানতে চাই। আমাদের মধ্যে কয়জন পরিবর্তনকে ভয় পাই? কেউ যখন উত্তর দিল না-তখন সে বললো হাত তুললে কেমন হয়? একটা হাত যখন উঠলো তখন সে বললো তার মানে আমাদের মধ্যে একজন সত্যবাদী মানুষ আছে। সে বলেই চলল মনে হয় আপনাদের পরের প্রশ্ন বেশি পছন্দ হবে। আপনারা কতজন মনে করেন অন্যেরা পরিবর্তনে ভয় পায়? সকলেই হাত তুলল, এই হাত তুলা দেখে সবাই হেসে উঠলো-এতে কি বোঝা গেল? অস্বীকার-নাথান উত্তর দিল। নিশ্চয়ই-মাইকেল স্বীকার করে নিল। মানে আমরা বুঝি না যে, আমরা ভয় পাচ্ছি। আমি নিজে বুঝতে পারি না। যখন আমি গল্পটা শুনলাম তখন আমার এই প্রশ্নটাই ভালো লেগেছে, যদি ভয় না-পেয়ে থাক তাহলে তুমি কি করতে?তখন জেসিকা যোগ করল, আমরা এ গল্প থেকে যা বুঝলাম তা হলো পরিবর্তন সব সময়েই ঘটেছে এবং আমরা যদি তার সাথে দ্রুত এডজাস্ট করতে পারি তবে আমরা অনেক ভালো করতে পারি।আমার মনে পড়ছে-কয়েক বছর আগে আমাদের কোম্পানি ২০ বছর ধরে একটি এনসাইক্লোপিডিয়া বিক্রি করত। একজন শুভাকাঙ্ক্ষী আমাদের বোঝাবার চেষ্টা করেছিলো যে, আমরা যাতে পুরো এনসাইক্লোপিডিয়াকে একটা কম্পিউটার ডিস্কে করে বিক্রি করি। এতে দাম অনেক কমে যাবে। আপডেট করা সহজ হবে, বইয়ের উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেক কমদামে উৎপাদন করা যাবে এবং অনেক বেশি লোক ডিস্কটি কিনতে পারবে। কিন্তু আমরা প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করি। ‘কেন তোমরা তা প্রত্যাখ্যান করলে?’ নাথান জানতে চাইল।
পৃষ্ঠা:৪৭
কারণ আমি বিশ্বাস করতাম যে, আমাদের ব্যবসায়ে চালিকাশক্তি হলো আমাদের বিরাট বিক্রয়কর্মী যারা ঘরে ঘরে গিয়ে ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করত। এদের ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন ছিল অধিক কমিশন যা তারা বেশি মূল্যের পণ্য থেকেই পেত। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সফলভাবে তা করতে পারায় ভাবছিলাম অনন্তকাল এ ব্যবসা চলতে থাকবে।লোরা বললো এটা গল্পে বলা হেম ও হাউ-এর সফলতার দাম্ভিকতা মনে করিয়ে দেয়। তারা দাম্ভিকতার জন্য ঘটতে থাকা চেঞ্জকে আমলে নেয়নি।নাথান বললো, তার মানে তুমি ভেবেছিলে তোমার পুরোনো চিজ ছিল একমাত্র তোমারই। হ্যাঁ আমরা এটা নিয়েই ডুবে থাকতে চেয়েছিলাম। হুঁশ হলে ভাবলাম আমাদের কি হলো? আমি দেখলাম শুধু কেউ চিজটাই সরিয়ে নেয়নি বরং চিজের নিজেরই একটা জীবন ছিল এবং তার আয়ু শেষ হয়ে গিয়েছে। যেভাবেই হোক আমরা চেঞ্জ হইনি। কিন্তু আমাদের প্রতিযোগিরা পালটে গেল এবং আমাদের বিক্রি একদম কমে গেল। আমরা এখন কঠিন সময় পার করছি। এখন আরেকটি বড়ো ধরনের পরিবর্তন এই শিল্পে ঘটতে যাচ্ছে যা কেউই আমলে নিচ্ছে না। আমার চাকরিটা মনে হয় অচিরেই চলে যাচ্ছে। এটা এখন মেইজ টাইম-কার্লোস বলে উঠলো, সবাই হাসল, জেসিকাও। কার্লোস জেসিকার দিকে ফিরে বললো ভালোই তো হলো তুমিও নিজেকে নিয়ে হাসতে পারলে।
পৃষ্ঠা:৪৮
ফ্র্যাংক বললো, আমি এ গল্প থেকে বুঝতে পারলাম, আমি ব্যাপারটাকে খুব সিরিয়াসলি নিচ্ছি। আমি দেখলাম যখন হাউ নিজেকে নিয়ে এবং নিজের বোকামী নিয়ে হাসতে পেরেছিলো তখন সে কিভাবে পরিবর্তিত হয়ে গেল। বিষ্ময়ের কিছু নেই-সেই হলো হাউ। গ্রুপের সবাই এসব কথায় হেসে উঠলো। এঞ্জেলা বললো হেম কি কখনো চেঞ্জ হয়ে নতুন চিজ খুঁজে পেয়েছিলো বলে তুমি মনে কর? ইলাইন বললো আমার মনে হয় সে তা পেরেছিল।আমার মনে হয় না-কোরি বললো, কিছু মানুষ কখনো চেঞ্জ হয় না এবং তার জন্য তাদেরকে মূল্য দিতে হয়। ডাক্তারী করতে গিয়ে আমি অনেক হেমকে পাই। তারা তাদের চিজের মালিকানায় বিভোর থাকে। যখন তা সরিয়ে নেয়া হয় তখন তারা নিজেদেরকে ভিকটিম ভাবে এবং অন্যকে দোষারূপ করে। চলতে চাওয়া লোকদের থেকে তারা আরো বেশি অস্বস্তিবোধ করে।নাথান যেন নিজের সাথেই বলছে এমন শান্তভাবে নাথাল বললো, আমার মনে হয় প্রশ্নটা হলো আমাদের কি কি পরিবর্তন হতে দেয়া উচিত এবং কি কি পরিবর্তনে নিজেরা সাড়া দেয়া উচিত? কিছুক্ষণ কেউ কোন কথা বললো না।আমাকে স্বীকার করতেই হবে, নাথান বললো দেশের বিভিন্ন স্থানে কি পরিবর্তন হচ্ছে তা আমি দেখেছিলাম কিন্তু আমার মনে হয়নি এটি আমাকে এফেক্ট করতে পারে। আমার মনে হয়, যখনই পারা যায় পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া বাধ্য হয়ে চেঞ্জ হওয়া এবং এডজাস্ট করা থেকে অনেক ভালো। আমাদের নিজেদের চিজকেই নিজেরা সরিয়ে ফেলা মনে হয় ভালো। তুমি কি বলতে চাও? ফ্র্যাংক
পৃষ্ঠা:৪৯
বললো। উত্তরে নাথানা বললো, কিছু করতে পারছি না কিন্তু বিস্মিত হয়ে ভাবছি যদি আমরা আমাদের পুরোনো স্টোরগুলোর রিয়েল এস্টেট মার্কেটে বিক্রি করে ফেলে একটা বিশাল আকারের আধুনিক স্টোর গড়ে তুলতে পারতাম যা দিয়ে ওদের সাথে ভালো প্রতিযোগিতা করতে পারতাম। লোরা বললো, মনে হয় হাউ এটা বুঝাতে দেয়ালে লিখেছিলো এডভেঞ্চার উপভোগ কর এবং চিজ নিয়ে দৌড়াও।ফ্র্যাংক বললো, আমার মনে হয় কিছু জিনিসের পরিবর্তন হওয়া উচিত না। যেমন বেসিক ভ্যালু। আমাকে আমার মৌলিক মূল্যবোধ আঁকড়ে ধরা উচিত। কিন্তু আমি এখন বুঝতে পারছি আমি অনেক ভালো থাকতে পারতাম যদি আগেভাগেই চিজ নিয়ে দৌড়াতে পারতাম। মাইকেল এটা একটা চমৎকার ছোটগল্পের রিভিউ-তুমি কিভাবে নিজের কোম্পানিতে তার ব্যবহার করতে পার?গ্রুপের কেউই এখনো তা জানে না-কিন্তু রিচার্ডের একরকম কিছু পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা ছিল। কিছুদিন আগে বউয়ের সাথে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর সে এখন টিন এজারদের দেখাশোনার কাজ করেই কেরিয়ারের ব্যালেন্স আনার চেষ্টা করছে।মাইকেল উত্তরে বললো, যখনই দৈনদিন যে সমস্যা আমার সামনে আসত তা ম্যানেজ করা ছিল আমাদের কাজ। কিন্তু আমার উচিত ছিল সামনের দিকে তাকানো এবং আমরা কোথায় যাচ্ছি সেদিকে মনোযোগ দেয়া। কিন্তু কলিগস, আমি কি দিনের ২৪ ঘণ্টা সব সমস্যা ম্যানেজ করতে পেরেছিলাম। আমি একটা ইঁদুর দৌড়ে ছিলাম যা থেকে বের হতে পারছিলাম না।
পৃষ্ঠা:৫০
লুরা বললো, তার মানে যখন তোমার লিড দেয়ার কথা তখন তুমি শুধু ম্যানেজ করে যাচ্ছিলে।আসলে মাইকেল বললো, যখন আমি হু মুভড মাই চিজ? গল্পটা শুনলাম আমি বুঝতে পারলাম আমার জব ছিল মনের মধ্যে নতুন কোন চিজের ছবি, থাকে ঘিরে আবর্তিত হতে থাকা যাতে পরিবর্তন ও তার ফলশ্রুতিতে পাওয়া সফলতা এনজয় করা যায়। এটা কর্মক্ষেত্রে হোক আর ব্যক্তিগত জীবনেই হোক।নাথান জানতে চাইল, তুমি তোমার কর্মক্ষেত্রে কিভাবে কাজ করতে?ওয়েল। যখন আমি আমার কোম্পানির লোকদের কাছে জানতে চাইতাম এই গল্পের কোন চরিত্রের সাথে তাদের মিল আছে। আমি এই চারটি চরিত্রের প্রত্যেকটিকেই ওখানে পেতাম। আমি দেখতে পেতাম স্লিফ ও স্কারি হেম ও হাউ প্রত্যেককে যাদের সমস্যা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে সমাধান করা উচিত। আমাদের স্নিফরা মার্কেটের পরিবর্তন আগে ভাগেই শুঁকে বলে দিতে পারত, তারা আমাদের কোম্পানির ভিশনকে আপডেট করতে সাহায্য করত। বাজারের পরিবর্তন প্রত্যেকটি পণ্যের উপর কি ফলাফল বয়ে আনতে পারে, কাস্টমারদের চাওয়া-পাওয়া কি হতে পারে এসব ব্যাপার আন্দাজ করে নিতে ওদেরকে উৎসাহ দেয়া হত। স্নিফরা তা পছন্দ করত এবং তারা বলত যে কোম্পানি পরিবর্তনকে চিহ্নিত করে তার সাথে খাপ খাইয়ে নেয়াতে তারা এখানে কাজ করে মজা পাচ্ছে। আমাদের স্কারিরা কর্ম সম্পাদন পছন্দ করত। এসব কাজ হবে কোম্পানির আপডেট করা ভিশনের ভিত্তিতে। তাদেরকে শুধুমাত্র মনিটর করার প্রয়োজন ছিল যাতে তারা ভুল পথে পা না-বাড়ায়।
পৃ্ষ্ঠা ৫১ থেকে ৬০
পৃষ্ঠা:৫১
তাদের যেসব কাজ কোম্পানির জন্য নতুন চিজ আনতে পারত তাদেরকে সেসব কাজের জন্য পুরস্কৃত করা হত। তারাও এমন কোম্পানির জন্য কাজ করতে পছন্দ করত যে কোম্পানি কাজের মর্যাদা দিতে জানেন।কিন্তু হেম ও হাউদের ব্যাপারে? এঞ্জেলা জানতে চাইল।দুর্ভাগ্যবশত হেমরা ছিল এমন শিকল যারা আমাদেরকে পিছিয়ে দিত-মাইকেল উত্তরে বললো, পরিবর্তনে হয় তারা খুব ভালো থাকত নতুবা খুব ভয় পেত। কিছু কিছু হেম যখন দেখত আমাদের দেখিয়ে দেয়া পরিবর্তনে ফলে তারা লাভবান হতে যাচ্ছে তখনই তারা পরিবর্তিত হয়ে যেত। আমাদের হেমরা বলত তারা নতুন জায়গায় কাজ করতে চায় যে জায়গাটা অধিক নিরাপদ। তাই তারা আশু পরিবর্তনকে ভালো করে বুঝে নিতে চাইত এবং চাইত এই পরিবর্তন যাতে তাদের আরো অধিক নিরাপদে রাখে। যখন তারা বুঝত যে আসল বিপদে তারাই পড়বে যারা পরিবর্তিত হতে চাইবে না-তখন তারা পরিবর্তিত হয়ে যেত, এবং ভালোভাবে কাজ করত ভিশনটাই আমাদের অনেক হেমকে হাউতে পরিবর্তন করে দিত।যেসব হেম পরিবর্তিত হতে চাইত না-তাদেরকে তোমরা কি করতে? ফ্র্যাংক জানতে চাইল।ওদেরকে চলে যেতে দিয়ে থাকি, মাইকেল মন খারাপ করেই বললো, আমরা আমাদের সব কর্মীকে ধরে রাখতে চাই, চাই সবাইকে নিয়ে কাজ করতে। কিন্তু আমরা জানি যদি কেউ আমাদের ব্যবসার প্রয়োজনে রাতারাতি পরিবর্তিত না হতে পারে, তবে আমাদের সবাইকে সমস্যায় পড়তে হবে। তারপর সে
পৃষ্ঠা:৫২
বললো গুড নিউজ হলো যদিও আমাদের হাউরা প্রথমত দ্বিধান্বিত হয়ে যায়, পরে তারা যথেষ্ট খোলামনে নতুন কিছু শিখতে চায় অন্যভাবে কাজ করতে চায় এবং সময়ে পরিবর্তিত হয়ে প্রতিষ্ঠানের সাফল্যে অংশগ্রহণ করে।তারা পরিবর্তনকে মেনে নেয় এবং পরিবর্তন হচ্ছে তা সক্রিয়ভাবে অবলোকন করে। যেহেতু তারা মানবীয় চরিত্র ভালো বুঝে সেহেতু তারা পারে নতুন নতুন চিজের বাস্তব ছবি আঁকতে সাহায্য করতে যা আমাদের প্রত্যেকের জন্যই সুসংবাদ বয়ে আনে।তারা এমনও বলে যে, তারা এমন একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চায়, যে প্রতিষ্ঠান তার কর্মীদের সাহস যোগায় এবং পরিবর্তিত হওয়ার প্রয়োজনীয় কলাকৌশল সরবরাহ করে। এবং সেন্সর অব হিউমার ঠিক রেখে নতুন চিজের পিছনে আমাদের তৎপরতায় সাহায্য করে। রিচার্ড মন্তব্য করলো-এই ছোটগল্প থেকে তুমি এতসব নির্দেশনা পেয়েছ।মাইকেল হাসল এটা কোন গল্প নয়। আমরা যেভাবে বুঝি সে ভাবেই কাজ করি। তাই আমাদের কাজের মধ্যে ভিন্নতা থাকতে পারে।এঞ্জেলা স্বীকার করল, আমি অনেকটা হেমের মতই। গল্পের সবচেয়ে শক্তিশালী পয়েন্ট হলো যখন হাউ নিজের ভয় পাওয়া নিয়ে হেসে উঠলো এবং নতুন চিজ উপভোগ করার ছবি মনের মধ্যে আঁকতে পেরেছিলো। এটাই তাকে মেইজে নিয়ে গেল ভয় কমিয়ে দিল এবং মেইজের ছোটাছুটিকে খুব এনজয় করলো। ফলশ্রুতিতে সে বেশ লাভবান হলো-যা আমিও প্রায়ই হতে চাই।
পৃষ্ঠা:৫৩
ফ্র্যাংক কৌতূকছলে বললো, তাহলে হেমরাও মাঝে মাঝে পরিবর্তনের লাভ দেখতে পায়। কার্লোস হেসে উঠলো, অনেকটা চাকরি টিকিয়ে রাখার সুবিধার মত। এঞ্জেলা যোগ করল, ‘অথবা বেতন বাড়ানোর রিভিউ’-এই আলোচনার সময় সে ভ্রুকুটি করছিল। বললো, আমার ম্যানেজার জানাল যে, আমাদের কোম্পানিকে চেঞ্জ হতে হবে। আমি ভাবলাম সে যা বলছে তা করা দরকার কিন্তু আমি সেসব কথা শুনতে চাই না। আমার মনে হলো আমি মোটেই জানি না এই নতুন চিজটা কি যার দিকে সে আমাদেরকে নিয়ে যেতে চায়। অথবা আমি কিভাবে তা থেকে লাভবান হতে পারি।রিচার্ডের মুখে হাসি ফুটে উঠলো যখন তার ম্যানেজার বললো, আমাকে স্বীকার করতে হবে যে, আমি নতুন চিজের আইডিয়াটা পছন্দ করছি এবং কল্পনায় তোমাদেরকে দেখছি এনজয় করতে। এটা সবকিছুকে উজ্জ্বল করে তুলছে। যখন তোমরা দেখবে এই পরিবর্তনটা তোমাদের কাজকে আরো উন্নত করে তুলছে তখন তুমি নিজেই পরিবর্তনে আরো উৎসাহিত হয়ে উঠবে।মনে হয় আমার ব্যক্তিগত জীবনেও এটা কাজে লাগতে পারে। সে আরো বললো, আমার বাচ্চারা মনে করে জীবনে কিছুই পরিবর্তন হওয়ার নয়। আমার মনে হয় তারা হেমের মতই কাজ করছে তারা রেগে আছে নিজেদের অবস্থানের উপর। মনে হয় তারা তাদের ভবিষ্যত নিয়ে বেশ শংকিত। মনে হয় আমি নতুন চিজের কোন বাস্তব ছবি তাদের সামনে উপস্থাপন করতে পারিনি। সম্ভবত নিজের জন্যও না।
পৃষ্ঠা:৫৪
গ্রুপের সব সদস্য নিস্তব্ধ হয়ে গেল যেন অনেকেই নিজেদের নিয়ে চিন্তা করছিল। ওয়েল জেসিকা বললো, অনেকেই নিজেদের চাকরি নিয়ে ভাবছে। কিন্তু গল্পটা শুনেই নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চিন্তা করছি। আমার মনে হয় আমার বর্তমান সম্পর্কটা অনেকটা বাসি চিজ হয়ে গেছে যাতে অনেক জটিল পাক ধরেছে। আমারও সম্ভবত খারাপ সম্পর্কটা চুকিয়ে ফেলা উচিত। এঞ্জেলা পালটা যুক্তি দিল অথবা সম্ভবত পুরাতন চিজ পুরাতন আচরণ মাত্র। আমাদের যা ত্যাগ করা উচিত তা হলো পুরাতন আচরণ যার জন্য সম্পর্কের চিড় ধরেছে। তারপর ভালো ভাবে চিন্তা করে কাজ করার দিকে এগুতে হবে।রিচার্ড বললো, আমি ভাবছি আমরা এ নিয়ে যা ভাবছি এই গল্পটা তার চেয়ে অনেক বেশি। আমি পুরাতন সম্পর্ক ত্যাগ না-করে পুরাতন অভ্যাসের ত্যাগের আইডিয়াটা বেশি পছন্দ করছি। একই ধরনের ফলাফল নিয়ে আসবে। চাকরি পরিবর্তন করার চেয়ে কাজ করার পদ্ধতিই পরিবর্তন করা উচিত। তা করতে পারলে সম্ভবত আমি আরো ভালোভাবে থাকতে পারতাম।বেকি অন্য শহরে থাকে ইউনিয়ন উপলক্ষে সেও মিলিত হয়েছে। সে বললো, আমি গল্পটা শুনলাম সবার মতামতও জানলাম। নিজেকে নিয়ে হাসতে হচ্ছে। আমি দীর্ঘদিন হেমের মতই ছিলাম। নিজেকে দোষারূপ করা চিৎকার দেয়া এবং পরিবর্তনের ভয় পাওয়া এ সবই ছিল আমার কাজ। আমি জানতাম না-অন্যরা কেমন করে সুন্দরভাবে মানিয়ে নিচ্ছে। আমি ভয় পেয়েছিলাম
পৃষ্ঠা:৫৫
কারণ নিজেই মানিয়ে নেয়া ভালোভাবে জানিনা অথচ তা শিশুদের উপর চাপিয়ে দিয়েছিলাম।চেঞ্জ তোমাকে নতুন ও উন্নত অবস্থানে নিয়ে যেতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি। যদিও একই সময়ে এই ভয়ও আছে যে, পরিবর্তনে নিজের অবস্থান দুর্বল হয়ে যেতে পারে।আমার মনে পড়ছে যখন আমার ছেলে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ত তখন আমার স্বামীকে চাকরির জন্য ইলিনস থেকে ভেরমন্ট-এ যেতে হলো। আমার ছেলে আপসেট হয়ে পড়ল যেহেতু তার বন্ধু-বান্ধব ছাড়তে হবে। সে খুব ভালো সাঁতারু ছিল এবং ভেরমন্ট-এর হাইস্কুলে কোন সাঁতারের টিম ছিল না। তাই তাকে আমাদের সাথে যেতে হবে বলে আমাদের উপর রেগে গেল। পরবর্তীতে সে ভেরমেন্ট-এর পাহাড়গুলোর প্রেমে পড়ল, স্কি শুরু করল, কলেজ টিমের সাথে স্কি করতে লাগল। এবং এখন কলরোডতে সুখিভাবে জীবনযাপন করতে পেরেছিল।আমরা সবাই যদি এই চিজের গল্পটা পরিবারের সদস্যদের সাথে গরম এক কাপ চকলেট খেতে খেতে উপভোগ করতে পারতাম তাহলে ওদের বিভিন্ন ধরনের চাপ থেকে বাঁচাতে পারতাম।জেসিকা বললো, আমি বাড়ি গিয়ে সবাইকে গল্পটা বলব। আমার বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করব তাদের মধ্যে কে স্নিফ, কে স্কারি, কে হেম, কে হাউ। আমাদের পরিবারে পুরাতন চিজ সম্পর্কে কে বলতে পারবে, কে বলতে পারবে আমাদের নতুন চিজই-বা কোথায়?
পৃষ্ঠা:৫৬
সবাইকে এবং সাথে সাথে নিজেকেও সারপ্রাইজ করে দিয়ে রিচার্ড বললো, এটা খুব ভালো আইডিয়া।ফ্র্যাংক মন্তব্য করল, আমার মনে হয় আমি এখন হাউয়ের মতই হয়ে যাচ্ছি, চিজের পিছনে দৌড়াচ্ছি এবং এনজয় করছি। আমি আমার বন্ধুদের মধ্যে যারা মিলিটারি পেশা ছাড়তে ভয় পাচ্ছে তাদের মধ্যে এই গল্পটা প্রচার করব। তারা চেঞ্জকে কিভাবে দেখছে তা জানতে চাইব ফলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনায় আসবে।মাইকেল বললো, এভাবেই আমরা আমাদের ব্যবসায়ের উন্নতি করেছি। অনেকবারই আমরা আলোচনা করেছি চিজের গল্প থেকে। আমাদের শিক্ষা নিয়ে এবং কিভাবে এই শিক্ষা আমরা বাস্তবে ব্যবহার করতে পারি।এটা খুব মজার, আমরা গল্পটা ব্যবহার করতাম পরিবর্তনের সাথে কাজ করার পদ্ধতির ব্যাপারে সবাইকে শিক্ষা দিতে। এটা খুবই ফলপ্রসূ ছিল বিশেষভাবে কোম্পানির গভীরে মেসেজটা ছড়িয়ে দিতে।নাথান জানতে চাইল, গভীর বলতে তুমি কি বুঝাচ্ছ?ভালো কথা আমরা যতই ভিতরে যাবো দেখতে পাবো অনেকেই আছে যাদের ক্ষমতা খুবই কম। তারা খুব ভয়ে থাকে যে, কখন কি পরিবর্তন শীর্ষ থেকে তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়। তাই তারা প্রতিহত করে, সংক্ষেপে পরিবর্তনই পরিবর্তনে বাঁধা ডেকে আনে।
পৃষ্ঠা:৫৭
কিন্তু যদি চিজ স্টোরিটি সংগঠনের প্রত্যেকের সাথে শেয়ার করা হয়, তখন পরিবর্তনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সহায়তা হয়। এটা প্রত্যেককে হাসতে সাহায্য করে অথবা কমপক্ষে মুচকি হাসি এবং তা থেকে উত্তোরনের চেষ্টা করায়।আমি যদি আরো আগে চিজ স্টোরিটি শুনতে পেতাম। মাইকেল যোগ করল।তাতে কি হত কার্লোস জিজ্ঞেস করল।এতদিনে আমরা চেঞ্জকে এড্রেস করতে শিখে ফেলতাম। আমাদের ব্যবসা এতই পড়ে গিয়েছিল যে, আমরা অনেককেই চলে যেতে দিয়েছি। ওদের মধ্যে অনেকে ভালো বন্ধুরাও ছিল। আমাদের সবার জন্য এসব অনেক কষ্টকর ব্যাপার ছিল। যদিও যারা থেকে গিয়েছিলো বা যারা চলে গিয়েছিলো তাদের অধিকাংশের ধারনা ছিল যে, চিজ স্টোরি যে কোন বিষয়কে আলাদা করে দেখা ওঠার সাথে ভালোভাবে খাপ খাওয়াতে পারা শিখিয়েছিল। যারা চলে গিয়ে নতুন চাকরি খুঁজেছে তারা বলেছে প্রথম প্রথম কঠিন মনে হলেও এই স্টোরিটা মনে করার তা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিলো।এনজেলা জানতে চাইল, কোন জিনিসটা তাদের বেশি সাহায্য করেছে।?মাইকেল উত্তরে বললো, তারা নিজেদের ভয় দূর করার পরই সবচেয়ে ভালো উপলব্ধিটা ছিল এই যে, তাদের জন্য নতুন চিজ বাইরে কোথায় অপেক্ষা করছে।
পৃষ্ঠা:৫৮
তারা বলেছিলো মনের মধ্যে নতুন চিজের ধারনা একে নেয়া নতুন জবে ভালোভাবে কাজ করতে দেখা তাদেরকে ভালো একটা অনুভূতি এনে দিয়েছিলো এবং জব ইন্টারভিউতেও তাদেরকে সাহায্য করেছিলো। এদের অনেকেই ভালো জব পেয়েছিলো। লোরা জানতে চাইল যারা কোম্পানিতে থেকে গিয়েছিলো তাদের কি হয়েছিলো?ভালো কথা মাইকেল বললো, চেঞ্জের ব্যাপারে যারা অভিযোগ করত এখন তারা বলছে ওরা আমাদের চিজ সরিয়ে নিয়েছে। চল নতুন চিজ খুঁজি। এতে সময় অনেক বেঁচে গেছে এবং মানসিক চাপও কমেছে।আগে যারা পরিবর্তনের বিরোধিতা করত তারা এখন পরিবর্তনের সুবিধা ভোগ করছে। এমনকি তারা পরিবর্তন আনতে সাহায্য করছে।কোরি বললো, তোমার মতে তারা চেঞ্জ হয়ে গেল? তারা পরিবর্তিত হওয়ার কারণ পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া কোম্পানির সহকর্মীদের প্রেসার। সে জানতে চাইল টপ ম্যানেজমেন্ট যখন ঘোষণা দেয় তখন অধিকাংশ কোম্পানিতে কি ঘটে? বেশির ভাগ মানুষ কি বলে? চেঞ্জ ভালো না-খারাপ? এটা খারাপ আইডিয়া ফ্র্যাংক উত্তরে বললো। হ্যাঁ, মাইকেল জানতে চাইল-কিন্তু কেন?কার্লোস উত্তরে বললো, কারণ মানুষ চায় সবকিছু একইভাবে থাকুক এবং তারা ভাবে পরিবর্তনটা তাদের জন্য ভালো না। একজন যখন বলবে চেঞ্জ ভালো না-তখন অন্যরাও তাতে সায় দিবে
পৃষ্ঠা:৫৯
হ্যাঁ তারা আসলে হয়ত সে রকম ভাবে না। মাইকেল বললো, কিন্তু সবার সাথেই তারা সুর তুলে। এটাই হলো পিয়ার প্রেসার যা যে কোন সংগঠনে পরিবর্তনের বিরোধিতা করে। বেকি বললো, চিজ স্টোরি শোনার পর তারা কিভাবে নিজের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাল? মাইকেল সরলভাবে বললো, পিয়ার প্রেসার চেঞ্জ হয়ে গেল। কারো আর হেমের মত দৃষ্টিভঙ্গি থাকলো না। শুনে সকলেই হেসে উঠলো। তারা আগেভাগেই পরিবর্তন আঁচ করতে চাইত এবং সে অনুযায়ী কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ত। আগের মত আর মাথায় হাতুড়ি পেটা করে পিছনে পড়ে থাকত না।নাথান বললো, এটা একটা ভালো পয়েন্ট। আমাদের কোম্পানির কেউ আর হেমের মত নয়। তারা হয়তো চেঞ্জ হয়ে হয়ে থাকবে। তুমি কেন-এর আগে রিইউনিয়নে এই গল্পটি বললে না? এতে অনেক ভালো কাজ হত। মাইকেল বললো, এটা ভালো কাজ করছে। যখন তোমার প্রতিষ্ঠানের সবাই গল্পটি জানবে তখন তা আরো ভালো কাজ করবে। তা বড়ো করপোরেশন, ছোটখাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা তোমার পরিবারই যেটাই হোক না-কেন। কারণ একটা প্রতিষ্ঠান তখনই চেঞ্জ হয় যখন তার অধিকাংশ মানুষ চেঞ্জ হয়ে যায়।তখন সে এ ব্যাপারে শেষ ধারনাটি শেয়ার করল, যখন আমরা দেখি আমাদের ক্ষেত্রে এই ধারনাটা ভালো কাজ দিচ্ছে তখন তা
পৃষ্ঠা:৬০
আমরা অন্যদের কাছে পাস করে দেই তাদের কাছে যারা পরিবর্তন নিয়ে কাজ করছে। তখন আমরা তাদের বলি যে, আমরাই হতে পারি তাদের নতুন চিজ, ভালো পার্টনার যাকে নিয়ে তারা সফল হতে পারে। এটা নতুন ব্যবসার পথ দেখায়।জেসিকা নতুন অনেক ব্যবসার আইডিয়া পেলো এবং তার মনে হলো আজ সকালেই কয়েকটা সেইল কল ছিল। সে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললো, এখন আমার এই চিজ স্টেশন ত্যাগ করার সময় হলো এবং আমাকে নতুন চিজ খুঁজতে হবে।গ্রুপের সবাই হেসে উঠলো এবং গুড বাই বলা শুরু করল। অনেকে এ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক হলেও তাদেরকেও উঠতে হলো। উঠার আগে আবারও মাইকেলকে ধন্যবাদ দিল।সে বললো, আমি খুবই খুশি কারণ তোমরা সকলেই এই গল্পটাকে প্রয়োজনীয় মনে করেছো এবং আমি এও আশাবাদী যে, তোমরা সকলই অন্যের সাথে গল্পটি শেয়ার করার সুযোগ পাবে।